সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নিয়ম ২০২৫ সম্পর্কে জেনে নিন। কেননা ৩০ অক্টোবরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট অপারেটরের মাধ্যমে একটি nid তে ১০ টির বেশি সিম থাকলে ডি-রেজিস্টার করার নির্দেশনা দিয়েছে বিটিআরসি।
আমাদের অনেকেই বিভিন্ন অফারের জন্য একাধিক সিম কিনে ফেলি। অফার শেষ হয়ে গেলে সেই সিমগুলো আর ব্যবহার হয় না। ফলে সেগুলো অযথা ঘরে পড়ে থাকে।
সময়ের সঙ্গে দেখা যায়, একটি জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) দিয়ে এত সিম রেজিস্ট্রেশন করা আছে যে নতুন সিম নেওয়া যাচ্ছে না। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে প্রয়োজন পুরনো বা অপ্রয়োজনীয় সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা। চলুন দেখে নিই কীভাবে সহজে সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করবেন।
On This Page:
কেন সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নিয়ম জানা জরুরি?

বাংলাদেশ টেলি কমিনিকেশান বিটিআরসির নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এখন থেকে একজন ব্যক্তির নামে ১০টির বেশি সিম থাকতে পারবে না। এর আগে একজন গ্রাহক জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দিয়ে সব অপারেটর মিলিয়ে সর্বোচ্চ ১৫টি সিম নিবন্ধন করতে পারতেন।
অপরাধ দমনে ২০১৫ সালে বিটিআরসি জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে সিম নিবন্ধন চালু করে। ২০১৭ সালে নিয়ম করা হয় একজন গ্রাহক তার আইডি কার্ড (NID) দিয়ে সর্বোচ্চ ১৫টি নিবন্ধিন করতে পরবেন।
২০২৫ সালে এশে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন বলছে, তারা পর্যলোচনায় করে দেখেছেন একজনের নামে এত বেশিসংখ্যক সিমের প্রয়োজন নেই।
পাশাপাশি জাতীয় নিরাপত্তা, অপারেটরদের অসুস্থ প্রতিযোগিতা, ডাটাবেস ক্লিন রাখতে এবং আন্তর্জাতিক অনুশীলন চর্চা বিবেচনায় একজনের নামের বিপরীতে সিম সর্বোচ্চ ১০টি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ
জিপি বন্ধ সিম অফার কোড & রিচার্জ
ব্রুনাই ১ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা |
কিভাবে সিম রেজিস্ট্রেশন চেক করবেন? এবং বাতিল করার আগে যা জানা জরুরি
সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার আগে প্রথমে জানতে হবে সিমটি কার নামে রেজিস্ট্রেশন করা আছে।
সিমের মালিকানা কিভাবে চেক করব? সিমের মালিকানা বা সিম রেজিস্ট্রেশন কার নামে চেক করতে *১৬০০১# ডায়াল করতে হবে। তারপর জাতীয় পরিচয়পত্রের শেষ চারটি সংখ্যা দিতে হবে। এসএমএস এর মাধ্যমে আপনার nid তে কতটি সিম রেজিস্ট্রেশন করা আছে তা জানিয়ে দেয়া হবে।
- একটি nid তে কতটি সিম রেজিস্ট্রেশন করা আছে জানতে আপনার মোবাইল থেকে *16001# ডায়াল করুন।
- এরপর জাতীয় পরিচয়পত্রের শেষ চারটি সংখ্যা দিতে হবে।
- ফিরতি মেসেজে জানিয়ে দেওয়া হবে কতটি সিম আপনার নামে রেজিস্ট্রেশন করা আছে।
কোন অপারেটরে কতটি সিম রেজিস্ট্রেশন করা আছে তা জানতে পারবেন। যদি কোনো সিম আপনার না হয়ে থাকে, কিংবা অনেক পুরোনো সিম যেটি এখন আর ব্যবহার করছেন না, সেগুলোর রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে অপারেটরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নিয়ম ২০২৫
সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার মূলত দুটি পদ্ধতি রয়েছে। একটি হচ্ছে সিম কোম্পানির হেল্পলাইনে কল করে এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে তাদের সরাসরি কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে সিম বন্ধ করতে পারেন।
হেল্পলাইনে কল করে সিম বাতিল করার উপায়
যদি আপনার হাতে থাকা সিমটি নিজের নামে হয়, তাহলে সেই সিম থেকে সংশ্লিষ্ট অপারেটরের হেল্পলাইন নম্বর ১২১ তে কল দিন। কাস্টমার কেয়ারের প্রতিনিধি আপনার এনআইডি নাম্বার ও কিছু যাচাইকরণ তথ্য চাইবে। সবকিছু সঠিকভাবে যাচাই হলে সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে দেওয়া হবে।
কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে সিম বন্ধ করার নিয়ম
যদি সিমটি হারিয়ে যায় বা অন্য কেউ ব্যবহার করে, তাহলে টেলিকম কোম্পানির নিকটস্থ কাস্টমার কেয়ারে যেতে হবে।
সাথে নিয়ে যেতে হবে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি। যাচাই প্রক্রিয়া শেষে সিমটি স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুনঃ
একজনের নামে ১০টি সিম নিবন্ধন থাকবে, সময়সীমা ৩০ অক্টোবর ২০২৫
BTCL MVNO: একসাথে ভয়েস, ইন্টারনেট ও বিনোদনের নতুন যুগ
অতিরিক্ত সিম বন্ধ করার উপায় কি?
অতিরিক্ত সিম বন্ধ করার জন্যও একই প্রক্রিয়া প্রযোজ্য। আপনি যে অপারেটরের সিম বন্ধ করতে চান, তাদের সিম থেকে ১২১ নম্বরে কল করুন।
প্রতিনিধি আপনার এনআইডি নম্বর ও বন্ধের কারণ জিজ্ঞাসা করবে। সব তথ্য সঠিক হলে অতিরিক্ত সিম বন্ধ করা সম্ভব হবে।
অনলাইনে সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নিয়ম
অনলাইনে সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নিয়ম হচ্ছে, আপনি যে কোম্পানির সিম ব্যাবহার করেন ঐ টেলিকম সিম থেকে ১২১ নম্বরে কল করা।
এছাড়া অনলাইনে সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার অন্য কোন নিয়ম চালু নেই।
জিপি সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নিয়ম
গ্রামীণফোন (GP) সিম বন্ধ করার দুইটি উপায় রয়েছে।
১. হেল্পলাইনে কল করে
আপনার জিপি সিম থেকে ১২১ নম্বরে কল করুন। আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য দিন এবং সঠিক যাচাই হলে সিম বন্ধ করে দেওয়া হবে।
২. কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে
আপনার সিম ও এনআইডি কপি নিয়ে নিকটস্থ গ্রামীণফোন কাস্টমার কেয়ারে যান। সেখানে যাচাই শেষে সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হবে।
বাংলালিংক সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নিয়ম
বাংলালিংক সিম বন্ধের প্রক্রিয়া জিপির মতোই সহজ। আপনি চাইলে ১২১ নম্বরে কল করে বা সরাসরি বাংলালিংক সেন্টারে গিয়ে এনআইডি তথ্য দিয়ে সিম বন্ধ করতে পারেন।
রবি সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নিয়ম
রবি সিম বন্ধ করতে প্রথমে রবি হেল্পলাইন ১২১ নম্বারে কল করুন। আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য যাচাই শেষে রবি কাস্টমার কেয়ার প্রতিনিধি সিমটি বন্ধ করে দেবে। আপনি চাইলে সরাসরি রবি কাস্টমার কেয়ার অফিসেও যেতে পারেন।
এয়ারটেল সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নিয়ম
- এয়ারটেল সিম বন্ধ করতে আপনি দুটি উপায় ব্যবহার করতে পারেন।
- ১. সরাসরি হেল্পলাইন *16001# নম্বারে কল করে তথ্য দিন।
- ২. কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে গিয়ে এনআইডি কপি দেখিয়ে সিম বন্ধ করুন।
মনে রাখবেন সকল হারিয়ে যাওয়া সিমের ক্ষেত্রেও একই প্রক্রিয়া প্রযোজ্য।
টেলিটক সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নিয়ম
- টেলিটক সিম বন্ধ করতে নিকটস্থ টেলিটক কাস্টমার কেয়ারে যেতে হবে।
- জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য দিয়ে সিম বাতিলের আবেদন করুন।
- সিম হারিয়ে গেলে প্রমাণস্বরূপ এনআইডি তথ্য জমা দিতে হবে।
সিমের মালিকানা পরিবর্তন করার নিয়ম
যদি আপনি সিমের মালিকানা পরিবর্তন করতে চান, তাহলে পুরোনো মালিক ও নতুন মালিক দুজনকেই কাস্টমার কেয়ারে উপস্থিত থাকতে হবে।
সঙ্গে রাখতে হবে দুইজনের জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি ও পাসপোর্ট সাইজের ছবি। যাচাই শেষে ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেওয়া হবে এবং রেজিস্ট্রেশন পরিবর্তন সম্পন্ন হবে।
বর্তমানে গ্রামীণফোন অনলাইনে সিম মালিকানা পরিবর্তনের সুযোগ দিয়েছে। আবেদন করার পর তথ্য যাচাই করে সিম ট্রান্সফার সম্পন্ন হয়।
সিম বন্ধ করার কোড সম্পর্কে ভুল ধারণা
অনেকে মনে করেন সিম বন্ধ করার নির্দিষ্ট কোনো কোড আছে, কিন্তু আসলে তা নয়।
সিম বন্ধ করার জন্য হেল্পলাইন নম্বরে কল করতে হয় বা কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করতে হয়।
সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নিয়ম কি?
বাড়তি সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নিয়ম হচ্ছে টেলিকম কোম্পানির হেল্পলাইন ১২১ নম্বরে কল করা অথবা নিকটস্থ কাস্টমার কেয়ারে ভিজিট করা।
সিম রেজিস্ট্রেশন কার নামে জানবেন যেভাবে?
আপনার নামে কয়টি সিম রেজিস্ট্রেশন আছে তা জানতে মোবাইলে *16001# ডায়াল করুন। তারপর এনআইডির শেষ চার ডিজিট দিন। ফিরতি মেসেজে জানিয়ে দেওয়া হবে কতটি সিম আপনার নামে আছে।
শেষ কথা
অপ্রয়োজনীয় বা হারিয়ে যাওয়া সিম দ্রুত বন্ধ করা আপনার নিজের নিরাপত্তার জন্য জরুরি।
কারণ সক্রিয় সিম অন্য কেউ ব্যবহার করলে নানা অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি থাকে।
তাই সময়মতো সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে নিরাপদ থাকুন।
আশা করি আপনি সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নিয়ম ২০২৫ সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আপনার মনে আর কোন প্রস্ন থাকলে কমেন্ট করুন।
বিডি অফার নিউজ ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন ।
বিডি অফার নিউজ ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করে সাথে থাকুনঃ এখানে ক্লিক করুন ।
সকল সিমের অফার সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুনঃ www.bdoffernews.com সাইট ।